আমিনুল হক
বিশেষ প্রতিনিধি:
কুমিল্লা চান্দিনায় মাটি বিক্রি করে পুরো মাটি না দিয়ে মাটি ব্যবসায়ীকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চান্দিনার হারং এলাকার মৃত আয়েত আলীর পুত্র ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুর রব জানান কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুর রব জানান, খিরাসার গ্রামের মোঃ খোরশেদ আলম ফকিরের নিকট থেকে আমি ৪ টাকা ফুট দরে ২ লাখ ৩৮ হাজার ফুট মাটি ৯ লাখ ৫২ হাজার টাকায় ক্রয় করি। কিন্তু ৯৮ হাজার ফুট মাটি কাটার পর তিনি বাকী ১ লাখ ৪০ হাজার ফুট মাটি কাটতে বাধা দেন। পরে কর্তনকৃত মাটির দাম ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা বাদ দিয়ে বাকী ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার ওয়াদা করেন। কিন্তু ওয়াদাকৃত নির্ধারিত সময় ৫ আগস্ট পার হলেও তিনি টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বহুবার দেনদরবার হয়। এ ঘটনায় গত ৯ সেপ্টেম্বর মাটি বিক্রেতা খোরশেদ আলম ফকিরের বাড়িতে গেলে তিনি মাটি দিতে অস্বীকার করে এবং টাকা না দিয়ে উল্টো আমাকে মারধর করেন।
গতকাল ১৫ নভেম্বর কুমিল্লার চান্দিনার হারং এলাকায় এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মাটি ব্যবসায়ী আবদুর রব। এসময় উপস্থিত ছিলেন হারং গ্রামের মৃত বারেক মিয়ার পুত্র বিল্লাল হোসেন, চিরাল্লা গ্রামের গনি মিয়ার পুত্র তাজুল ইসলাম, এতবার গ্রামের মৃত আসকর আলীর পুত্র মো: রমজান আলী, চিরাল্লা গ্রামের মৃত চান মিয়ার পুত্র মো: সুরুজ মিয়া, এতবার গ্রামের ফজর আলীর পুত্র আবুল কাশেম প্রমুখ।
এদিকে, মাটি বিক্রি করে পুরো মাটি না দেওয়া এবং বিক্রির টাকাও ফেরত না দেওয়ার ঘটনায় খোরশেদ আলম ফকিরসহ ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন মাটি ব্যবসায়ী আবদুর রব।
এ বিষয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রশিদ মেম্বার জানান, আবদুর রব এবং খোরশেদ আলম ফকিরের মধ্যে যে মাটি ও টাকা নিয়ে বিরোধ সেটি আমি দেখেছি। ফকির সাহেব মাটি বিক্রি করেছে সত্য এবং টাকা নিয়েছে সত্য কিন্তু কিছু মাটি দেওয়ার পর এখন কেন মাটি দিচ্ছেনা তা বুঝতে পারছিনা।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, আবদুর রব এবং খোরশেদ আলম ফকির মাটি বিক্রির সময় এবং টাকা লেনদেনের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। ঘটনাটি আমি জানিনা। তাছাড়া খোরশেদ আলম ফকির আমার ওয়ার্ডের নয় তাই বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছেনা।
এতবারপুর গ্রামের মৃত আসকর আলীর পুত্র মোঃ রমজান আলী সরকার জানান, খোরশেদ আলম ফকির সাহেবের লেনদেন ভাল না । সে মুখে মিঠা কথা বলে কিন্তু তার অন্তরে ভেজাল।
চিরাল্লা গ্রামের মৃত চান মিয়ার পুত্র মোঃ সুরুজ মিয়া জানান, খোরশেদ আলম ফকির একজন টাউট, বাটপার। তারমত এরকম টাউট, বাটপার চান্দিনায় আর আছে কিনা সন্দেহ আছে। সে মানুষকে দিয়ে কাজ করিয়ে টাকা পয়সা দিতে চায়না। অন্যের হক নষ্ট করে সে এক নাম্বার চিটার।
অভিযুক্ত বরকইট ইউনিয়নের খিরাসার মোহনপুর এলাকার মৃত আব্বাস আলীর পুত্র মো: খোরশেদ আলম ফকির জানান, আবদুর রব আমার কাছ থেকে কোন টাকা পাবেনা বরং আমি তার নিকট থেকে টাকা পাব। আমি মামলা করার কথা কিন্তু উল্টো সে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বিষয়টি আদালতে প্রমান হবে।
এ ঘটনায় চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামস উদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।